বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যঃ ঐতিহাসিক মসজিদের শহর বাগেরহাট
খ্রিষ্টীয় পনের শতকে খান-ই-জাহান পদবীধারী একজন মহান সাধক-যোদ্ধা বর্তমান বাগেরহাট শহরের পশ্চিম প্রান্তে একটি শহরের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মুদ্রা প্রমাণের উপর ভিত্তি করে পন্ডিতগণ মনে করেন যে, খ্রিষ্টীয় ষোল শতকের দিকে এ শহরটি খলিফাতাবাদ নামেই পরিচিত ছিল। এই সমৃদ্ধ শহরটি অসংখ্য মসজিদ, ইমারতরাজি, জলাশয়, রাস্তা ও সমাধি সৌধ দ্বারা পরিপূর্ণ ছিল। যার অধিকাংশই আজ বিলুপ্ত। টিকে থাকা নিদর্শণসমূহের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ষাটগম্বুজ মসজিদ, সিঙ্গাইর মসজিদ, বিবিবেগনী মসজিদ, চুনাখোলা মসজিদ, রেজাখোদা মসজিদ ও নয়গম্বুজ মসজিদ, খানজাহানের সমাধিসৌধ, জিন্দাপীরের মাজার ও মসজিদ, রণবিজয়পুর মসজিদ প্রভৃতি। এগুলো পূর্ব-পশ্চিমে 2.5 কিলোমিটার এবং উত্তর-দক্ষিণে প্রায় 6 কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে আছে। মানব জাতির কাছে স্থাপত্যিক নিদর্শন হিসেবে এর বিশ্বজনীন গুরুত্ব থাকায় বাগেরহাটের পুরাকীর্তি সমূহ 1985সালে ইউনেস্কোর বিশ্বঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।
বাগেরহাট জাদুঘর
আধুনিক বিশ্বে জাদুঘর কে অননাষ্ঠানিক শিক্ষায়তনের মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণকরা হয়। উত্তরোত্তর বিশ্বব্যাপী জাদুঘরের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় এটি বর্তমানে সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে রূপ নিয়েছে। জাদুঘর কোন একটি দেশ বা অঞ্চলের শিল্প, ইতিহাস, প্রযুক্তি, নৃতত্ত্ব এবং প্রাণীবিদ্যা ছাড়াও একাধিক বিষয় কে একটি নিয়মতান্ত্রিক ও সুশৃঙ্খল পদ্ধতিতে দর্শকদের নিকট উপস্থাপন করে থাকে। বাগেরহাট জাদুঘর মহান সাধক হযরত খানজাহান (রঃ) এর ইতিহাস, সাংস্কৃতিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য, শিক্ষাদানের পাশাপাশি মধ্যযুগের বিস্মৃত নগরীর শহর খলিফাতাবাদ ও শহর মুহাম্মাদাবাদে প্রাপ্ত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক নিদর্শনের মাধ্যমে বিস্মৃত জনগষ্ঠির ইতিহাস ও ঐতিহ্য উপস্থাপন করছে। এ জাদুঘরটি মধ্যযুগের অন্ধকারাচ্ছন্ন সময়ের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও নৃতাত্ত্বিক সম্পর্কে শিক্ষাদানের সাথে সাথে জনগণকে ইতিহাস ও ঐতিহ্য সচেতন করে তোলার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ছয়’শ বছরের পুরাতন মুসলিম আমলের সমৃদ্ধশালী বিস্মৃত নগরী খলিফাতাবাদের প্রাচীন ইতিহাস এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও উপস্থাপনের লক্ষ্যে 1992 সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতায় পাহাড়পুর-বাগেরহাট পুরাকীর্তি সংস্কার ও সংরক্ষণ প্রকল্প কর্তৃক প্রায় 44লক্ষ টাকা ব্যয়ে অন-সাইট প্রত্নস্থল কেন্দ্রীক জাদুঘরটি নির্মিত হয়।
World Cultural Heritage: The historic mosque town Bagerhat
In the 15th century AD, a great saint-warrior named Khan-i-Jahan founded a town on the western side of present-day Bagerhat. On the basis of monetary evidence, scholars believe that the city was known as Khalifatabad in the 16th century AD. This rich city was filled with numerous mosques, buildings, reservoirs, roads and tombs. Most of which are extinct today. Among the surviving signs are the Shatagumbu Masjid, Singaier Mosque, Bibbighnagi Mosque, Chunkhola Mosque, Rezakhoda Mosque and Ninegambu Mosque, the tombs of Khanjahan, the shrine and mosque mosque of Zindapir. They are spread 2.5 km to the east-west and about 6 km to the north-south. Due to its universal importance as an architectural symbol to the human race, the antiquities of Bagerhat were included in the UNESCO World Heritage List in 1985.
Bagerhat Museum
In the modern world, museums are regarded as one of the most effective institutions of informal education. With the increasing worldwide popularity of museums, it has now become a cultural center. In addition to the art, history, technology, anthropology and zoology of a country or region, the museum presents many subjects to visitors in a systematic and systematic manner. The Bagerhat Museum presents the history, cultural and archeological traditions of the great saint Hazrat Khan Jahan (RA), as well as the history and traditions of the forgotten people through various cultural artifacts found in the medieval city of Khalifatabad and the city of Muhammadabad. The museum has been playing an active role in educating the people about history, heritage and heritage, along with teaching about cultural, social and ethnographic times of the dark ages of the Middle Ages. The site was built by Paharpur-Bagerhat Antiquities Rehabilitation and Conservation Project at an expenditure of Tk 44 lakh on the site of the ancient city of Khalifatabad, a richly forgotten city of about six hundred years old Muslim period in the southwest of the country, to preserve and present the ancient history and tradition.
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস